Echoes of Kindness

সমুদ্রে ভাসা ভালবাসা – পৌছে দিয়ো আল্লাহ! Echoes of Kindness

সময় হাতে নিয়ে বসে আছি, আর মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে উঠছে, মিসর ও লিবিয়ার কিছু বিশাল হৃদয়ের মানুষের আত্মার ভালবাসা দেখে। এটি একটি অসাধারণ ঘটনা। যখন অনেক ধনী মানুষেরা ভোগ বিলাসিতায় ব্যস্ত। তাদের জন্য সেই সকল মজলুম অনাহারে শুকিয়ে মৃত্যু পথযাত্রী মুসলিমদের কথা যেন মনে করারও সময়টি পর্যন্ত নাই। যখন ত্রাণের কথা বলে এক যায়গায় সকল অসহায়দেরকে একত্রিত করে বোমাতে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। যখন তাদের কাছে সঠিকভাবে খাবার পৌছানোর রাস্তাগুলিও একের পর এক সব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ঠিক তখন মিসর ও লিবিয়ার কিছু দরিদ্র মানুষেরা, যাদের নিজেদের জীবনেও অগণিত কষ্ট, তারা আজ একটি অসাধ্য স্বপ্ন দেখছে—একটি মায়াবী আশার স্বপ্ন, যা ভূমধ্যসাগরের ঢেউয়ের সঙ্গে ভেসে চলেছে গাজার ক্ষুধার্ত উপকূলের উদ্দেশে।

মিসর ও লিবিয়ার কিছু আত্মার ধনী মানুষেরা হাতে হাত দিয়ে প্লাস্টিকের বোতলে খেজুর আর বাদাম ভরে সমুদ্রে ছুঁড়ে দিচ্ছে। বুক ভারা এই আশাতে “যদি বোতলগুলি ভাসতে ভাসতে ফিলিস্তিনের ক্ষুধার্থ কোন ভাই বোন বা শিশুর হাতে পড়ে”। এই বোতলগুলো নিছক প্লাস্টিক নয়, এগুলো হলো আশার বাহক, ভালোবাসার দূত। মিসর ও লিবিয়ার এই সাধারণ মানুষ, যারা নিজেরা গত ২০১১ সালের গৃহযুদ্ধের ধ্বংসাবশেষে জীবন কাটাচ্ছে, তারা তাদের ক্ষুদ্র সম্পদ দান করে এক দূরবর্তী ভাই-বোনের জন্য।

গাজায়, যেখানে ফেব্রুয়ারি থেকে সাহায্য বন্ধ থাকায় ২.১ মিলিয়ন মানুষ ক্ষুধায় কাতর, সেখানে এই বোতলগুলো হয়তো একটি অলৌকিক আশার আলো নিয়ে পৌঁছবে। ঢেউয়ের দোলায় দোলায় দুলতে দুলতে হয়ত আল্লাহ তায়ালা পৌছে দিবেন দূর থেকে আরেক মুসলমানের ভালবাসা।

আল্লাহ তায়ালা চাইলে এই দুনিয়ায় সবকিছুই এক পলকে নিজেই করে দেখাতে পারেন। তার কারও সাহায্যের দরকার নেই। তবে তিনি এই দুনিয়াতে বিভিন্নভাবে আমাদেরকে শুধু যাচাই করেন। যার ফলাফল আমরা ভোগ করবো হাশরের ময়দানে সর্বশেষ ফয়সালা তে।

মিসর ও লিবিয়ার এই দৃশ্য দেখে সত্যিই আমার চোখ ভিজে গেছে। কারণ এটি শুধু খাদ্য নয়, এটি একটি সংগ্রাম, একটি ভরসা, যা বলে, “আমরা এক, আমরা একে অপরের জন্য আছি।” আমরা ভাই ভাই, তোমাদের আমাদের আত্মাগুলি, কষ্টগুলি এক। তোমাদের অভুক্ত রেখে আমাদের মুখে খাবার রুচে না।

জাতিসংঘের প্রতিবেদন বলছে, গত জুলাই মাসে মাত্র ১,০৫৪ পালেস্টিনি খাদ্যের সন্ধানে প্রাণ হারিয়েছে—এই বোতলগুলো হয়তো তাদের কিছু আশা ফিরিয়ে আনবে। গাজার জন্য প্রার্থনা করি, এবং মিসর-লিবিয়ার অফুরন্ত মায়ায় ভরা হৃদয়গুলোর প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। যদি কোনো দিন এই বোতলগুলো গাজার কূলে পৌঁছে, তবে সেখানে হাসি ফুটবে—এবং সেই হাসির পেছনে থাকবে মিসর ও লিবিয়ার দরিদ্র কিছু মানুষের শ্রেষ্ঠ ও মায়াবী ভালোবাসা। ও আল্লাহ ! তাদের এই ভালবাসাকে তুমি পৌছে দিয়ো। সাগর তোমার, আকাশ তোমার, সারা পৃথিবী সারা জাহান তোমার। আমিন।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *