যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশে এটিই সেই গোপন চুক্তি – যা এতিদিন লুকিয়ে রাখা হয়েছিলো!
বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তায় নতুন চুক্তি: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ৫ বছরে ৩৫ লাখ টন গম আমদানির চুক্তি প্রকাশ হয়ে গেছে। গত ২১ জুলাই ২০২৫বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টিমান নিশ্চিত করতে আরেকটি বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গত ২০ জুলাই ২০২৫ তারিখে বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আগামী পাঁচ বছরের জন্য প্রতি বছর ৭ লাখ মেট্রিক টন উচ্চমানের গম আমদানির একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির মাধ্যমে মোট ৩৫ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানি করা হবে, যা দেশের খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলাকে আরও শক্তিশালী করবে বলে উল্লেখ করা হচ্ছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ইউএস হুইট অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট জোসেফ কে. সোয়ার স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির মূল লক্ষ্য হলো প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে উচ্চমানের গম সরবরাহ নিশ্চিত করা, যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টির চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
চুক্তি টি কেন গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং খাদ্যের চাহিদা বাড়ার প্রেক্ষাপটে এই চুক্তি একটি কৌশলগত পদক্ষেপ। গম দেশের প্রধান খাদ্যশস্যগুলোর মধ্যে একটি, যা রুটি, নুডলস এবং অন্যান্য খাদ্যপণ্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এই চুক্তির মাধ্যমে সরকার নিশ্চিত করতে চায় যে, বাজারে গমের সরবরাহ স্থিতিশীল থাকবে এবং দাম নাগালের মধ্যে থাকবে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এই চুক্তির গুরুত্বের কথা উল্লেখ করলেও সতর্কতার সুরে বলেছেন, “একটি দেশের উপর নির্ভরতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। গমের দাম এবং বৈচিত্র্যময় সরবরাহ নিশ্চিত করতে অন্যান্য দেশের সঙ্গেও বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করা উচিত।” তিনি আরও জানান, উচ্চ দামে গম আমদানি জনগণের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
এই চুক্তি বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নীতির একটি অংশ। সরকারের পরিকল্পনা হলো গম আমদানির পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়ানো এবং খাদ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থা উন্নত করা। এছাড়া, অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বৈচিত্র্যময় করে বাজারের ঝুঁকি কমানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই গম আমদানি চুক্তি কে অনেকে বাংলাদেশের জন্য ফলপ্রসু দেখলেও অনেকেই এটিকে দেশের জন্য হুমকি স্বরুপ নিচ্ছে। সত্যিকার অর্থে এই চুক্তি কীভাবে বাস্তবায়িত হয় এবং এর প্রভাবে আরও কী কী হযতে পারে তা দেখার জন্য দেশবাসীকে অপেক্ষায় থাকতে হবে।
এই চুক্তি সম্পর্কে আপনার মতামত ও চিন্তা ভাবনা অবশ্যই পাঠকদের জন্য নিচের কমেন্ট বক্সে লিখে যাবেন। ধণ্যবাদ।